স্কুল ছাত্র ইমন হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক ০৩ জন আসামী গ্রেফতার।
স্কুল ছাত্র ইমন হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক ০৩ জন আসামী গ্রেফতার।
নিজস্ব প্রতিবেদক
র্যাবের অভিযানে নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত স্কুল ছাত্র ইমন হত্যা মামলার “মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত” দীর্ঘদিন পলাতক ০৩ জন আসামী গ্রেফতার। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদ্ধঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এাছাড়াও বিভিন্ন চাঞ্চল্যর এবং আলোচিত অপরাধের অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করে আসছে। নিবিড় গোয়েন্দা নজরদারী ও পরিকল্পিত আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধী গ্রেফতার এবং আইনের আওতায় এনে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ ও র্যাব-৭, সদর কোম্পানী, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম এর যৌথ আভিযানিক দল গত ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী থানাধীন চরলক্ষ্যা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দীর্ঘদিন যাবত আত্মগোপনে থাকা হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ১। আহম্মদ আলী (৬৬), ২। সেন্টু মিয়া (৩৬) এবং যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী ৩। হোসনা বেগম (৫৮)’দেরকে গ্রেফতার করে।
ঘটনা সূত্র ও এজাহার পর্যালোচনায় জানা যায় যে, গত ১৬ জুন ২০১৩ ইং তারিখ ভিকটিম মোঃ ইমন হোসেন (১৪) তার দাদার সাথে নিজ বাড়িতে ঘরে বসে টেলিভিশন দেখছিলেন। রাত্র অনুমান ০৮:৩০ ঘটিকার সময় এজাহারে উল্লেখিত আসামীরা ভিকটিমকে কৌশলে ঘর থেকে ডেকে বাহিরে নিয়ে যান। এরপর ভিকটিম আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। ভিকটিমের পিতা পরের দিন হতে আশ-পাশের এলাকাতে অনেক খোঁজাখুজির পরও ভিকটিমকে খুজে পায়নি। পরবর্তীতে ২২ জুন ২০১৩ ইং তারিখ অনুমান দুপুর ১৩:৩০ ঘটিকার দিকে ভিকটিমের বাড়ির উত্তর-পশ্চিম পাশে ধইঞ্চা ও ধান ক্ষেতের মধ্যে ভিকটিম ইমন এর ০৯ টুকরা খন্ড বিখন্ড গলিত লাশ পাওয়া যায়।
উল্লেখিত আসামীদের সাথে ভিকটিমের পরিবারের পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত কলহ চলছিলো। ভিকটিমের পরিবারের সাথে ঘটনার আনুমানিক দেড় বছর পূর্বে পারিবারিক কলহের জের ধরে আসামীদের সাথে কথা কাটা কাটির এক পর্যায়ে লাঠি দ্বারা মারামারি হয়। উক্ত মারামারিতে আসামি আহম্মদ আলী আঘাত প্রাপ্ত হন। এই বিষয়টি শালিস এর মাধ্যমে মিমাংসা হলেও আসামীদের ভিকটিমের পরিবারের উপর আক্রোশ থেকে যায়। এই শত্রুতার জের ধরে আসামীরা গত ১৬ জুন ২০১৩ ইং তারিখ ভিকটিম মোঃ ইমন হোসেনকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে এনে ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে হত্যা করে লাশ টুকরা টুকরা করে ধইঞ্চা ও ধান ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা লোক মারফাত সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের লাশ সনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় নিহত ইমনের পিতা বাদি হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত চার/পাঁচজনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৬২(৬)১৩ তারিখ-২৩/০৬/২০১৩ ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। উক্ত মামলায় গত ২০ মার্চ ২০২২ ইং তারিখ দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক বেগম ছাবিনা ইয়াছমিন স্কুলছাত্র শিশু ইমন হত্যা মামলার চারজনের মৃত্যুদন্ড রায় ঘোষনা করেন। একই সঙ্গে এই মামলায় দুই নারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও চারজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক গ্রেফতারী সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানা ইস্যু হলে র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ ও র্যাব-৭, সদর কোম্পানী, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম এর চৌকস যৌথ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরোয়ানায় বর্ণিত আসামী ১। আহম্মদ আলী (৬৬), পিতা- মৃত আঃ সামাদ, ২। সেন্টু মিয়া (৩৬), পিতা- আহম্মদ আলী ও ৩। হোসনা বেগম (৫৮), সর্ব সাং- চররাধা নগর, থানা- ফতুল্লা, জেলা- নারায়ণগঞ্জ’দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স